Thursday, December 25, 2014

সুশাসন সংকল্প


ভারতবর্ষের প্রথম সুশাসন দিবসে আপনাদের সকলকে অভিনন্দন l

 ভারতবর্ষে সুশাসন বর্তমান অতীতে কোনদিন ছিল কিনা বিতর্কের বিষয় l স্বাধীনতার পর দেশ বিভক্ত হবার ফলে যে সাম্প্রদায়িক সমস্যার উত্পন্ন হয় তার ফলে প্রথম থেকেই লাভের তুলনায় ক্ষতির মুখ দেখতে হয় দেশকে l হয় প্রাণনাশ হয় অর্থ নাশ l দেশে তখন অথনৈতিক কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল পশ্চিমবঙ্গ l
প্রথমেই নেতাজীর অন্তর্ধান নিয়ে শিহরিত ছিল বঙ্গ তার পর শ্রী শ্যামাপ্রসাদের অস্বাভিক মৃত্যু রহস্য কাঁপিয়ে দেয় বাংলার জনমানসকে l তারপর আরেক মৃত্যু শ্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রীর l এই দুখদায়ক ঘটনার মধ্যেই ছিল ১৯৫৫ সাল l ভারতের প্রধানমন্ত্রী তখন শ্রী জওহরলাল নেহেরু l নিয়ম অনুসার মন্ত্রিসভা ভারতরত্নের নাম প্রস্তাব করেন রাষ্ট্রপতি সেই নামের প্রস্তাবে সম্মতি দেন l অর্থাত পন্ডিত নেহেরুর মন্ত্রীসভাই অনার নাম প্রস্তাব করেন এবং রাষ্ট্রপতি সম্মতি দেন l নিন্দুকেরা বলে এতো নিজেকেই নিজে পুরস্কার প্রদান l অথচ পন্ডিত মদন মোহন মালাব্য ,যিনি ৪ বার কংগ্রেস এর সভাপতি ছিলেন আর স্বয়ং গান্ধীজি যাকে শিক্ষাদাতা হিসাবে গন্য করতেন তার নাম বিবেচিতই হয় না l

এরপর বাংলায় কমুনিস্টদের আগমন ঘটে l সারা ভারতে এর কোনো প্রভাব না থাকলেও বাংলায় তাদের প্রতিপত্তি বৃদ্ধি হয় l প্রধানমন্ত্রী তখন জওহরলাল এর কন্যা ইন্দিরা l ১৯৭২ এ ঘোষিত হয় ইমার্জেন্সি l এরই আগে ১৯৭১ সালে বিপদ বোঝেন ইন্দিরা l পিতার কায়দায় তারই মন্ত্রিসভা প্রস্তাব পাঠায় রাষ্ট্রপতিকে l অর্থাত পিতার অনুরূপ নিজেকেই নিজে ভারতরত্ন ঘোষণা করেন তিনি l 

 নকশাল আক্রমনে জর্জরিত হয় বাংলা l তার পর আসে CPM জমানা l যতটুকু শিল্প তৈরী হয়েছিল তারা সবাই ভিন্ন রাজ্যে পালিয়ে যান l বাংলায় নেমে আসে বেকারিত্যর অন্ধকার l ৩৪ বছর রাজত্বের শেষে সৃষ্টি হয় আরেক নৈরাজ্যের l শিল্পের পলায়ন অব্যাহত, বেকারিত্য বর্ধমান l
বামফ্রন্টের শেষে বাংলার ধার ছিল ১৮৭৩৪০.৪০ কোটি , তৃনমূলের জামানায় ৪ বছরে তা বেড়ে দাড়ানোর সম্ভবনা ২৭৫০০০ কোটি টাকা l
মজার কথা হলো ভারত এবং বাংলায় এই নৈরাজ্যের দিনে কংগ্রেস এর প্রাণ পুরুষ মদন মোহনের কথা কারোর মনেই পরেনি l



এরই মধ্যে আসে ভারতবর্ষের রাজনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় l প্রধানমন্ত্রী হন শ্রী অটল বিহারী বাজপায়ী l তার সড়ক পরিবহন এবং দূর সঞ্চার বিভাগের যুগান্তকারী নীতির ফলে ব্যবসার ঢেউ আসে ভারতবর্ষে , প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে বুঝিয়ে দেন ভারতের শক্তি,তার ফলে বহুল শক্তি বৃদ্ধি হয় ভারতের অন্তর্রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে l বিদেশী শক্তি বুঝতে পারেন ভারত তাদের কোথায় চলবে না l ভারতের অর্থ ভান্ডার বৃদ্ধি পায় আর এক শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসাবে সামনে আসে l তার সুশাসন ভারতবর্ষের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল সময় l আজকের দিন তার সুশাসনকে মনে করার দিন l 

তারপর আবার কংগ্রেস সরকার আসে, প্রথম ৫ বছরে অটল জি র কাজে সুবাদে কিছু উন্নতি হলেও পরের ৫ বছর দাঁড়ায় ধ্যংশের সময় l সমস্ত দেশের অর্থনীতির নাশ হয় , চুরি তে পৃথিবী তে শীর্ষ স্থান প্রতিযোগিতায় অগ্রসর হয় ভারত l বলা বাহুল্য এর মধ্যে অনেক ভারতরত্ন হলেও অটল বিহারীর নাম আসেনি l

তাই ২০১৪ সালে ভারতের রাজনীতির সমুল পরিবর্তন হয় l সারা ভারতবর্ষে এবং বাংলায় শ্রী নরেন্দ্র মোদির নাম আসার এল দেখেন ভারতবাসী l বিকাশের রাজনীতির সুচনা হয় l মূল্যবৃদ্ধি ৫ বছরের সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছয় l  ভারতের অর্থ ভান্ডার অল্প সময়ে বৃদ্ধি পায় , সর্বপরি সর্বস্তরে যে চুরির প্রাদুর্ভাব হয়েছিল তা সর্বনিম্নস্তরে পৌঁছয় , বিদেশনীতির সাফল্যে সমস্তে দেশ বোঝে ভারতে শক্তিশালী সরকার এসেছে l

আজ সেই বিকাশ পুরুষ অটল বিহারীর জন্মদিন l  বিকাশের যে রাস্তায় নরেন্দ্র মোদী হাঁটছেন সেই রাস্তার সুচনা হয়েছিল অটল বিহারীর হাত ধরে ,তাই আজকের বিকাশ পুরুষ মনে করেছেন তাকে l তার জন্মদিন কে ঘোষণা করা হয়েছে "সুশাসন দিবস" হিসাবে.ঘোষিত হয়েছে ভারতরত্ন, তাকে এবং স্বাধীনতার প্রাণ পুরুষ পন্ডিত মালাব্যর জন্যে l

তাদের গৌরব প্রদান করতে পেরে সারা দেশ গর্বিত l

ভারতে সুশাসনের ধারা যেন আর না থামে , এই সুশাসন দিবসের সংকল্প 


No comments:

Post a Comment