Thursday, September 4, 2014

জঙ্গীবাদের বিশ্বায়ণ ও বাংলাদেশে এর অবস্থান

Bangladesh


ধর্মীয় জঙ্গীবাদ সৃষ্টির প্রথম সুতিকার হিসাবে আজ বহু মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলি্র অবদান ও অবস্থান বিষয়ে কিছু সংক্ষেপে তুলে দেবার চেষ্টা করবো।

এক সময় ছিলো ভারতবর্ষের শিশু শিক্ষা কাযক্রম শুরু হতো গুরুগৃহ তথা টোল ব্যবস্থা থেকে। এসব টোলে অক্ষর জ্ঞানের পাশাপাশি নীতি শিক্ষা দেয়া হতো। যেমন আর্য দেবো ভব, গুরু দেবো ভব, মাতৃ দেবো ভব কিংবা গুরু জনে করো নতি, বিদ্যা বিনয় দান করে। অন্ধজনে দেহ আলো ইত্যাদি ইত্যাদি। গৃরুগৃহ উঠে গেছে বহু শতক আগে। তবে টিমে তালে ক্ষুদ্র পরিষরে টোলব্যবস্থার কিয়দাংশ ইংরেজ শাসনের শেষ দিন অবধি ছিলো। এককথায় বলা যায় ভারত বর্ষের হিন্দুদের গৃরুগৃহের আদলে ভারতের দেওবন্ধ সহ কয়েকটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পর ঐ মাদ্রাসা গুলিই উনিশ শতকে মুসলিম জাগরণে ভুমিকা রাখে। যার ফলশ্রুতিতে চরম সম্প্রদায়িক দ্বিজাতিতত্বের ধারণা প্রসব করানো হয়।

১৯৪৭ পরবর্তী আস্তে আস্তে হিন্দুদের টোল প্রথা বিলুপ্ত হয়ে সেস্থলে হিন্দুদের টোলের আদলে ইসলাম আগমন পরবর্তী মক্তব্য প্রথার চালু হয়। মূলতঃ ধর্মীয় শিক্ষার ভিত্তিটা দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের জন্য মক্তব কিংবা আর্থিক সামথ্য/বিত্তবারদের বাসায় হুজুর এসে আলিমপারা অক্ষর জ্ঞান দেবার মাধ্যমে শুরু হয়। ধর্মীয় শিক্ষার পরবর্তী স্তর হলো পর্যায়ক্রমে মাদ্রাসা (তাও ইফতেদায়ী, কওমী নানা ধরনের)। এসব মাদ্রাসায় ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। সেই সাথে সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থায় আছে মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত একশত নম্বরের ধর্মীয় শিক্ষা। উচ্চমাধ্যমিক পর্যায় হতে পোষ্ট গ্রাজুয়েশন পযৃন্ত বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ধর্মীয় শিক্ষার জন্য আছে আলাদা আলাদা বিভাগ। এছাড়াও আছে ধর্মীয় ভিত্তিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। *(মূলতঃ বিশ্ববিদ্যালয় ধারণাটি ব্যাপক, শুধু ধর্মের নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় হতে পারে ব্যাপারটা হাস্যকর, কেননা, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বহু অনুষদ থাকতে পারে, কোন ধর্মের নামে বড়জোর একটি বিষয়ভিত্তিক বিভাগ থাকতে পারে মাত্র। কিন্তু বাস্তবে তা না হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় (!), যেটিকে বিশ্ব মাদ্রাসা বললে সঠিক হতো বলে ধারনা করা যায়।) এছাড়াও আছে ধর্ম বিষয় ভিত্তিক ইতিহাস। যেখানে শুধু একটি ধর্ম বা গোষ্টি ভিত্তিক চিন্তার ভিত্তিতে লুটেরাদেরকে বীর হিসাবে উত্থাপন করা হয়েছে, আবার কখনো বা একই কারনে শৌয্য বীর্যবান বীরদের হীন ভাবে উত্থাপন করা হয়েছে এবং শিক্ষার্থীরা এভাবে শিখে এসেছে শুধু বাংলাদেশের এঅঞ্চলেই বিগত ৫ দশকের অধিককাল পরম্পরা একই ধারা বজায় রেখে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা, গবেষনা করে একই ধারার প্রজম্নের পর প্রজন্ম সৃষ্টি করেছে। একারণেই এখন আর শুধু মাদ্রাসায় আরবী, ফার্সী পড়ুয়া হুজুরাই বিধর্মী, কাফিরদের বিনাশের ধারনা মাথায় রাখেন না। বরং দেশের সর্বোচ্ছ বিদ্যাপীট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, চুয়েট, সহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর বিদ্যাপীটের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জঙ্গী সংশ্লিষ্ঠতা খবর পাওয়া যায়। একই কারণেই মেধার ভিত্তিতে স্কলারশীপ নিয়ে ইংল্যান্ড আমেরিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েও জঙ্গী সংশ্লিষ্ঠার কারণে প্রবাসে গ্রেফতার হয়।

মাত্রগর্ভ হতে কেহ জঙ্গী বা উগ্র হিসাবে জন্ম গ্রহন করে না। ধর্ম শিক্ষা বা নীতি শিক্ষার নামে মক্তব, গৃহে নিয়োগকৃত হুজুর, বহু মাধ্যমে মাদ্রাসা, সাধারণ শিক্ষার সাথে ধর্মীয় শিক্ষা বা ধর্মীয় বিষয় গুলি যদি মানুষে মানুষে বিভেদ করতে শেখানো হয়, যদি শেখায় ধর্মের নামে নিজেকে উৎসর্গ করা, কিংবা ধর্মের নামে ভিন্ন মতবাদের কাউকে আঘাত করা যদি বিশ্বাসের অংশ কিংবা ভিত্তি এবং একজন শিশু যদি তার শিক্ষার্কাক্রশুরু পর থেকে এটি শিখতে শিখতে বড় হয় এবং বড় হয়ে কর্ম জীবনে প্রবেশ করে থাকে তাহলে পরিনত বয়সে ঐ শিক্ষার্থী থেকে ভয়াবহ পরিনাম ছাড়া অন্য কিছু প্রত্যাশা করা অবান্তর মাত্র।
আজ বাংলাদেশ সহ মুসলিম বিশ্বের মক্তবে পড়ুয়া শিশুটি জানে কাফির কাকে বলে। তেমনি মাধ্যমিক পর্যায়ে একজন শিক্ষার্থী জানে কাফির নামে ভিন্ন মতাবলম্বীদের সাথে কিরুপ ব্যবহার করতে হবে। কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের বা শিক্ষাজীবন সমাপ্ত করে সমাজ কিংবা বিভিন্ন মাধ্যমে অবদান রাখতে তখন সমস্যাটা চরম আকার ধারণ করেন। এসময় শুধু অমুসলিমরাই কাফির, মুসরিক বা পৌত্যলিক হন না, বরং তিনি ধর্মের নামে তিনি যে চিন্তা ধারণ ও লালন করেন, একই সম্প্রদায়ভুক্ত হয়েও অন্যের দ্বারা এর ব্যতয় ঘটলে বেদাত কিংবা শেরেকি কিংবা বাতিল ইত্যাদি ধর্মের নামে ফতোয়া দিতে কুষ্ঠা বোধ করেন না। ফলে যা হবার তাই হয়। ব্যাপারটা সংক্ষেপে বলতে গেল বলতে হবে একটি শিশু সমবয়েসী প্রতিবেশী হিন্দু শিশুদের প্রতি আধো আধো ভাষায় ইন্দু নাস্তিক দিয়ে মনস্ত্বত্বাতিক বিভাজনের যাত্রা শুরু করে, আর অতিসম্প্রতি খুন হওয়া চ্যানেল আইয়ের ইসলামী অনুষ্ঠানের উপস্হাপক মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকী কিংবা ২০১৩ সালের গোপীবাগের ঈমাম মেহেদী দাবীদারের গলা কেটে সুসম্পন্ন করে। .


No comments:

Post a Comment