Thursday, March 19, 2015

রানাঘাট এবং কালিঘাট


ব্যাখ্যা কর
"The Ranaghat incident of 14th March 2015 is a very serious matter. The police administration was instructed to take swift action to nab the culprits. They are making their best efforts."

"Considering the seriousness and sensitivity of the case and also the fact that the place of incidence is very close to the border area, I have decided to entrust investigation of the case to CBI."

"Our Government will provide all necessary co-operation and assistance to the CBI for investigation in this case."

উত্তর –
বক্তব্যর মাধ্যামে, প্রথম আনুচ্ছেদে, দিদি ২০১৫ শনের ১৪ই মার্চের রানাঘাটের খ্রিস্টান মিসনারী বিদ্যালয়ে ৮ জন দুষ্কৃতির প্রবেশ, সারারাত ব্যাপী লুঠ এবং সবশেষে সত্তর ঊর্ধ্ব খ্রিস্টান সন্ন্যাষিনীর ধর্ষণের ঘটনা সমন্ধে তার নিজের মনের ভাব প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গবাসীর কাছে। ২০১১ শনের মে মাসে তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদে আসার পর পশ্চিমবঙ্গে অনেক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, যেমন পার্ক স্ট্রিট, বর্ধমান, কামদুনি, মধ্যমগ্রাম, হাওড়া, ধুপগুড়ি, ক্যানিং, লেক টাউন, কাটোয়ার ঘটনা তার মধ্যে অন্যতম, কিন্তু প্রতিটি ঘটনাকেই তুচ্ছ ঘটনা বা সাজানো ঘটনা বলেছেন। পৌনে চার বছরের মুখ্যমন্ত্রিত্বে এই প্রথম কোনো ধর্ষণের ঘটনাকে উনি গুরুতর ব্যাপার বলে মনে করেছেন। উনি এই ঘটনাটি এত গুরুতর ব্যাপার মনে করেছেন যে উনি পুলিশ প্রশাসনকে, অর্ণব ঘোষ ও রাজীব কুমারকে, নির্দেশ দিয়েছেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দুষ্কৃতিদের গ্রেফতার করতে। অর্ণব ঘোষ ও রাজীব কুমার হল পশ্চিমবঙ্গ বিখ্যাত পুলিশ জুটি! যে জুটি সারাদা কেলেঙ্কারির তদন্ত করার জন্য ভার পেয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী স্পেশাল ইনভেসটিগেশান টিম (সিট) বানিয়েছিলেন এই দুইজনকে নিয়ে। এনারা ১ বছর তদন্ত করে বিশেষ কিছুই পাননি বা উদ্ধার করতে পারেননি, এমনকি কুণাল ঘোষ ছাড়া কাউকেও গ্রেফতার করতে পারেননি! তারপর সি বি আই সারাদার তদন্তর ভার নেওয়াতে কি হয়েছে তা আমাদের সকলের জানা আছে। এমনই জুটিকে এই সন্ন্যাষিনী ধর্ষণের তদন্ত ভার দিয়ে তিনি মনে করছেন যে তারা আপ্রান চেষ্টা চালাচ্ছেন ৮ দুষ্কৃতিদের গ্রেফতার করার জন্য।



দ্বিতীয় আনুচ্ছেদে তিনি জানাচ্ছেন যে ধর্ষণের বিষয়টি বিবেচনা করে বুঝেছেন এর গম্ভিরতা ও সংবেদনশীলতা। তিনি গম্ভিরতাটা তখনই বুঝতে পেরেছিলেন যখন তিনি জানতে পেরেছিলেন যে ভ্যাটিক্যান সিটি থেকে খ্রিস্টান ধর্মগুরুরা আসছেন ধর্ষিতা সন্ন্যাষিনীকে দেখতে। ভ্যাটিক্যান সিটি থেকে খ্রিস্টান ধর্মগুরুরা যদি না আসতেন ধর্ষিতা সন্ন্যাষিনীকে দেখতে তাহলে হয়তো এই ধর্ষণ কাণ্ডটিকেও তিনি তুচ্ছ ঘটনা বা সাজানো ঘটনা বলে চালিয়ে দিতে পারতেন, সেই চেষ্টা যে তার দলবল যে করেনি তা নয়! ওনার এক মন্ত্রী এটিকে বিজেপির “ঘর ওয়াপাসী” আখ্যা দিতেও পিছুপা হননি। বিষয়টি সংবেদনশীল তিনি ১৬ই মার্চ ২০১৫তেই বুঝেছিলেন যখন তিনি রানাঘাটে খ্রিস্টান বিদ্যালয় ও সন্ন্যাষিনীকে দেখতেগিয়ে জানতে পেরেছিলেন ওনার সঙ্গে দেখা করার জন্য বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রিরা অপেক্ষা করে আছেন। উনি ছাত্র ছাত্রীদের অপ্রীতিকর প্রশ্নর উত্তরে এর আগে তানিয়া ভরদ্বাজকে সিপিএম ক্যাডার ও মাওবাদী আখ্যা দিয়েছিলেন, হয়তো সেই অপ্রীতিকর পরস্থিতি পুনরায় না ঘটে তাই ছাত্র ছাত্রিদের সঙ্গে না দেখা করে বের হয়ে যান। ছাত্র ছাত্রী আভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দারা ওনাকে ৫০ মিনিট ধরে ঘেরাও করে রাখেন।জনতা রাজ্য পুলিশের তদন্তর উপর অনাস্থা প্রকাশ করে সি বি আই তদন্তর দাবি করেন। এই ঘেরাও সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ছিল, তা সত্তেও তিনি ছাত্র, ছাত্রী, আভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সিপিএম ও বিজেপি আখ্যা দেন! ঘটনার স্থান ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত নিকটবর্তী হওয়াতে উনি মনে করেছেন সিবিআইকে তদন্তভার দেওয়া উচিত। শিয়ালদহ স্টেশন থেকে প্রতি ঘণ্টায় একটি ট্রেন ছাড়ে যার নাম গেদে লোকাল, যেটি শিয়ালদহ থেকে নৈহাটি - রানাঘাট – মাঝদিয়া হয়ে গেদে যায়। বনগাঁরই মতন গেদে, যেখান দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশ এর মধ্যে যাতায়াত হয়গেদে সীমান্ত পেড়িয়ে এতদিনে দুষ্কৃতিরা হয়ত বাংলাদেশ চলে গিয়েছে। প্রতি ঘণ্টায় যেখানে লোকাল ট্রেন আছে সেখানে ঘটনা ঘটার পাঁচ দিনের মাথায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়ায়ে তিনি কি সত্যিই দ্রুততার পরিচয় দিলেন না কেন্দ্রীয় সংস্থার উপর তদন্তভার দিয়ে নিজের সরকারকে দায়মুক্ত করলেন?

সর্বশেষ অনুচ্ছদে জানাচ্ছেন ওনার সরকার সব রকমের সহযোগিতা ও সহায়তা করবেন কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তে। একদা তাঁর প্রানভ্রমরা সিবিআই ইদানীং কালে সারাদা তদন্ত নিয়ে তাঁর গলগ্রহ হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেই তদন্ত নিয়ে তিনি অনেককে ভুল বুঝিয়েছেন। বলেছেন সিবিআই যদি তদন্ত করে সারাদা কেলেঙ্কারির তাহলে সারাদায় লগ্নিকারীদের লুঠ হওয়া টাকা সিবিআই ফেরত দেবে! এক্ষেত্রে তিনি আবার না বলে বসেন ধর্ষিতা সন্ন্যাষিনীর লুণ্ঠিত মান সন্মান সিবিআই ফেরত দেবে! যদি তদন্ত চলাকালীন দেখা যায় তাঁরই দলের লোকজন জড়িত তখন আইন মন্ত্রী অথবা ডেপুটি স্পিকার না ধরনায় বসেন! অথবা সারদা কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত হয়েও এই তদন্তর দ্বারা সিবিআইর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করছেন।৩৪ বছরের বাম জমানার অবশান ঘটিয়ে উনি আসাতে যে আশার আলো পশ্চিমবঙ্গের মানুষ দেখেছিলো তা যেন আজ আলেয়া।





No comments:

Post a Comment